ছাত্র সমাজ নিয়ে উক্তি


 

ছাত্র সমাজ ই আমাদের প্রাণশক্তি। আজকের ছাত্ররাই আগামী দিনের নাগরিক, নেতা, বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও নীতিনির্ধারক। তাই শিক্ষার্থীদের ভাবনা, স্বপ্ন ও কর্মশক্তিই নির্ধারণ করে একটি দেশের ভবিষ্যৎ পথচলা। ইতিহাস থেকে শুরু করে সমকালীন বিশ্বে, অসংখ্য মনীষী ছাত্র সমাজের ভূমিকা নিয়ে অনুপ্রেরণামূলক উক্তি রেখে গেছেন। এগুলো কেবল প্রেরণার উৎস নয়, বরং দিকনির্দেশক আলোও বটে।

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ছাত্র সমাজ নিয়ে বিভিন্ন বিখ্যাত মনিসীদের উক্তি শেয়ার করছি।

ছাত্র সমাজের শক্তি ও সম্ভাবনা

জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কফি আনান বলেছিলেন, “ভবিষ্যতের চাবিকাঠি যুবকদের হাতে। তাদের শক্তি, আদর্শবাদ এবং সাহস দিয়ে তারা পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারে।” এই কথায় বোঝা যায়, যুব সমাজই পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি। স্বামী বিবেকানন্দের অমর বাণী, “ওঠো, জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।” – শিক্ষার্থীদের অধ্যবসায়, শ্রম এবং লক্ষ্যভেদী মনোভাব গঠনে অসীম অনুপ্রেরণা জোগায়।

ড. এ. পি. জে. আবদুল কালাম স্বপ্ন সম্পর্কে বলেছেন, “স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।” এই বক্তব্য ছাত্রদের শেখায় যে তাদের ভেতরের আগুনই প্রকৃত প্রেরণা। আবার জোহান উলফগ্যাং ফন গোয়েথে মনে করিয়ে দিয়েছেন, একটি জাতির ভাগ্য মূলত তরুণ প্রজন্মের চিন্তা ও কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভর করে।

ছাত্র সমাজ নিয়ে উক্তি: শক্তি ও সম্ভাবনা

“ভবিষ্যতের চাবিকাঠি যুবকদের হাতে। তাদের শক্তি, আদর্শবাদ এবং সাহস দিয়ে তারা পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারে।” 

“ওঠো, জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না।” 

“স্বপ্ন সেটা নয় যেটা মানুষ ঘুমিয়ে দেখে, স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরণের প্রত্যাশা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।” 

“একটি দেশের ভাগ্য তার তরুণদের উপর নির্ভর করে, বিশেষ করে পঁচিশ বছরের কম বয়সীদের মতামতের উপর।” 

“যুব সমাজ হলো আগামী দিনের সূর্য, তাদের আলোয় জাতি আলোকিত হয়।” 

“তোমরা যুবকরা যদি স্বপ্ন দেখতে জানো, তবে ভবিষ্যৎ তোমাদের হাতেই লেখা হবে।” 

“তরুণদের প্রাণশক্তি হলো জাতির অগ্রগতির মূলধন।” 

“যুব সমাজ হলো নতুন ভোরের দূত, তাদের হাতে লুকিয়ে আছে পরিবর্তনের শক্তি।” 

“তরুণরা যদি জাগে, তবে অন্ধকার ভেদ করে আলো ছড়াতে বেশি সময় লাগে না।” 

“যৌবনের শক্তি পাহাড়কেও নত করতে পারে।” 

“তরুণরা যদি সঠিক পথে এগোয়, তবে তাদের রুখে দাঁড়ানোর মতো কোনো শক্তি নেই।” 

“জাতির প্রাণ হলো তার ছাত্র সমাজ; তারা এগোলে দেশ এগোয়।” 

“যুব সমাজ যদি আদর্শকে আঁকড়ে ধরে, তবে তারা ইতিহাস লিখতে পারে।” 

“তরুণদের শক্তি হলো অগ্নিশিখার মতো; সঠিক পথে কাজে লাগালে তা জাতিকে আলোকিত করে।”  

“যুবকরা স্বপ্ন দেখে, সাহস করে এবং সেই স্বপ্ন পূরণে লড়াই করে।” 

“যৌবনের শক্তি সঠিক কাজে ব্যবহার হলে তাতে অসম্ভব বলে কিছু থাকে না।”  

“ছাত্র সমাজ হলো পরিবর্তনের সেতুবন্ধন; তারা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ে।” 

“যুবকদের চিন্তা হলো আগামীর বাস্তবতা।” 

“যুব সমাজ যদি নিজের ভেতরের শক্তিকে চিনে নেয়, তবে তারা পুরো বিশ্বকে বদলে দিতে সক্ষম।” 

“তরুণদের শক্তি হলো জাতির নবজাগরণের ভিত্তি।”


ছাত্র সমাজের শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন

প্রাচীন সংস্কৃত প্রবাদে বলা হয়েছে, “ছাত্র নং অধ্যয়নং তপঃ।” অর্থাৎ, অধ্যয়নই ছাত্রদের প্রকৃত সাধনা। চাণক্য বলেছেন, “শিক্ষা হলো শ্রেষ্ঠ বন্ধু। একজন শিক্ষিত মানুষ সর্বত্র সম্মানিত। শিক্ষা সৌন্দর্য এবং যৌবনকেও হার মানায়।” শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত মর্যাদা অন্য কোনো গুণ বা বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে তুলনীয় নয়।

এরিস্টটল মনে করতেন, “যৌবনকালে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলোই জীবনের সব পার্থক্য তৈরি করে দেয়।” তাঁর আরও একটি বিখ্যাত উক্তি হলো, “শিক্ষার শেকড়ের স্বাদ তেতো হলেও এর ফল অত্যন্ত মিষ্টি।” অর্থাৎ কঠিন পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের ফলই মধুর ভবিষ্যৎ। ডায়োজেনেস শিক্ষার গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেছেন, “জাতির ভিত্তি হলো তার যুব সমাজের শিক্ষা।”

আধুনিক শিক্ষাদর্শনেও এই সত্যের প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়। জন ডিউই মনে করতেন, শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবল অন্যের চিন্তাভাবনা জানা নয়, বরং নিজস্ব চিন্তাশক্তি গড়ে তোলা। নেল পোস্টম্যানও বলেছিলেন, “শিশুরা জীবন্ত বার্তা যা আমরা এমন এক সময়ে প্রেরণ করি যা আমরা দেখতে পাব না।” এই বার্তাই শিক্ষার্থীদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মানবসভ্যতার উত্তরাধিকার বহন করতে শেখায়।

ছাত্র সমাজ নিয়ে উক্তি: শিক্ষা ও জ্ঞানার্জন

“ছাত্র নং অধ্যয়নং তপঃ।” (অধ্যয়নই ছাত্রদের তপস্যা।) 

“শিক্ষা হলো শ্রেষ্ঠ বন্ধু। একজন শিক্ষিত মানুষ সর্বত্র সম্মানিত। শিক্ষা সৌন্দর্য এবং যৌবনকে হার মানায়।” 

“যৌবনকালে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলোই জীবনের সব পার্থক্য তৈরি করে দেয়।” 

“জাতির ভিত্তি হলো তার যুব সমাজের শিক্ষা।” 

“শিক্ষার শেকড়ের স্বাদ তেতো হলেও এর ফল অত্যন্ত মিষ্টি।” 

“শিক্ষা মানুষকে মুক্ত করে।” 

“একজন শিক্ষিত মানুষের মূল্য হাজার অশিক্ষিত মানুষের চেয়েও বেশি।” 

“যে জাতি শিক্ষায় যত এগিয়ে, উন্নতিও তারা তত দ্রুত অর্জন করে।” 

“শিক্ষা হলো সেই আলো যা অন্ধকার দূর করে।” 

“অশিক্ষিত মন হলো তালাবদ্ধ ঘর, শিক্ষা সেই ঘরের তালা খোলে।” 

“সঠিক শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি কখনো টিকে থাকতে পারে না।” 

“শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবল তথ্য জানা নয়, বরং চিন্তা করতে শেখা।” 

“একজন ভালো শিক্ষার্থীই একদিন ভালো শিক্ষক হয়।” 

“জ্ঞানার্জনই ছাত্র সমাজের আসল অলংকার।” 

“শিক্ষা হলো সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র, যা দিয়ে পৃথিবীকে পরিবর্তন করা যায়।” 

“পড়াশোনা ছাড়া ছাত্র সমাজ হলো দিকহারা নৌকার মতো।” 

“শিক্ষা ছাড়া উন্নতি নেই, শিক্ষা ছাড়া সভ্যতা নেই।” 

“ছাত্রজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো জ্ঞান, যা কখনো চুরি হয় না।” 

“যত বেশি শেখা যায়, তত বেশি জানার তৃষ্ণা বাড়ে।” 

“শিক্ষা কেবল জীবিকার জন্য নয়, বরং মানবিকতা গড়ার জন্য।”

ছাত্র সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য

শিক্ষার্থীরা শুধু ভবিষ্যতের নেতা নয়, বর্তমান সমাজের সক্রিয় অংশও। নেপোলিয়ন বোনাপার্টের ভাষায়, “তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো।” – এই উক্তি শিক্ষার মূল চালিকা শক্তি পরিবার এবং বিশেষত মায়ের ভূমিকাকে তুলে ধরে।

কার্ট কোবেন মনে করতেন, যুব সমাজের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আর ফ্রান্সিস বেকনের মতে, তরুণরা কেবল বিচার-বিশ্লেষণে নয়, বরং উদ্ভাবন ও বাস্তবায়নে বেশি দক্ষ। এই দক্ষতাকেই সঠিক পথে কাজে লাগানোই ছাত্র সমাজের অন্যতম কর্তব্য।

ছাত্র সমাজ নিয়ে উক্তি: দায়িত্ব ও কর্তব্য

“তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেবো।” 

“যুব সমাজের প্রধান কর্তব্য হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।” 

“তরুণরা বিচার করার চেয়ে উদ্ভাবনে বেশি পারদর্শী; পরামর্শের চেয়ে বাস্তবায়নে বেশি দক্ষ।” 

“জাতির ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে শিক্ষার্থীদের চরিত্র, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীলতার উপর।” 

“ছাত্র সমাজের প্রথম কর্তব্য হলো শিক্ষা অর্জন করা এবং তা সমাজের কল্যাণে কাজে লাগানো।”  

“তরুণরা কেবল ভবিষ্যতের স্বপ্নদ্রষ্টা নয়, তারা বর্তমানের দায়িত্বশীল নাগরিকও।” 

“যুব সমাজের হাতে জাতির আশা; তাই তাদের কর্তব্য হলো সত্য, ন্যায় ও আদর্শ রক্ষা করা।” 

“দায়িত্ববান শিক্ষার্থীই আগামী দিনের সৎ নেতা।” 

“যুবকদের কর্তব্য হলো সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা।”  

“ছাত্রদের কেবল বইয়ের জ্ঞান অর্জন করাই নয়, বরং সমাজে জ্ঞানকে কাজে লাগানোও কর্তব্য।”  

“তরুণদের কর্তব্য হলো নিজের মধ্যে সততা গড়ে তোলা এবং জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়া।” 

“যুবকরা দায়িত্ব পালন করলে জাতি শক্তিশালী হয়, আর দায়িত্ব এড়ালে জাতি দুর্বল হয়।” 

“ছাত্র সমাজের কর্তব্য হলো মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করা।” 

“তরুণরা যদি দায়িত্বহীন হয়, তবে জাতি তার দিক হারায়।”  

“শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য হলো দায়িত্ববান নাগরিক তৈরি করা।”  

“ছাত্র সমাজের কর্তব্য হলো মানবিক মূল্যবোধকে লালন করা।” 

“যুবকদের শক্তি তখনই মূল্যবান হয়, যখন তা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে যুক্ত হয়।” 

“তরুণদের কর্তব্য হলো জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, পিছিয়ে দেওয়া নয়।” 

“একজন শিক্ষার্থীর দায়িত্ব হলো জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও নৈতিকতায় নিজেকে গড়ে তোলা।” 

“ছাত্র সমাজ হলো জাতির মেরুদণ্ড, আর তাদের দায়িত্ব হলো জাতিকে সুস্থ, সুন্দর ও শক্তিশালী রাখা।” 

উপসংহার

ছাত্র সমাজ হলো জাতির মেরুদণ্ড। তাদের স্বপ্ন, অধ্যবসায়, শিক্ষা এবং দায়িত্বশীলতার মধ্য দিয়েই একটি দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। তাই প্রতিটি শিক্ষার্থীকে নিজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আদর্শ, জ্ঞান ও সৃজনশীলতায় সমৃদ্ধ হতে হবে। অনুপ্রেরণামূলক এসব উক্তি কেবল প্রজন্মকে জাগ্রত করে না, বরং তাদের অন্তর্নিহিত শক্তিকে উন্মোচিত করে, যা দিয়ে তারা গড়তে পারে এক উজ্জ্বল আগামী।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url